প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস

image-not-found

দু'টি পাতা একটি কুঁড়ির নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে ঘেরা ও হাওর বাওরের অপার লীলাভূমি মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলাধীন ২নং পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের ছোট ধামাই উচ্চ বিদ্যালয়টি এতদঞ্চলের একটি প্রাচীন বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়টি এলাকার বিদ্যুতসাহী ব্যক্তিবর্গের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে নিম্ন-মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পরবর্তীতে এটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। বিদ্যালয়টির পশ্চিমে ধামাই এবং পূর্বে সোনারূপা নামে দু'টি ১ম শ্রেণির চা বাগান রয়েছে। আর এই দুই চা বাগানের মধ্যস্থলে মণিপুরী অধ্যুষিত ছোট ধামাই গ্রামেই বিদ্যালয়টির অবস্থান। ভৌগলিক অবস্থানের দিক থেকে বিদ্যালয়টির অবস্থান পাহাড়ি সমতল ভূমিতে। এটি মৌলভীবাজার জেলার একমাত্র বিদ্যালয় যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ আদিবাসী চা শ্রমিক ও মণিপুরী নৃ-গোষ্ঠীর ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া করছে। বিদ্যালয়ের ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীই আদিবাসী চা শ্রমিক ও মণিপুরী নৃ-গোষ্ঠীর সন্তান।
স্বাধীনতার পূর্ববতী সময়ে যখন আদিবাসী চা শ্রমিক তথা নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার মৌলিক অধিকার যখন অবহেলিত ঠিক সে সময়ে এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে দু'একজন গণ্যমান্য ব্যক্তির ত্যাগ ও স্বপ্নের বাস্তবায়নের ফসল হচ্ছে আজকের ছোট ধামাই উচ্চ বিদ্যালয়।

সভাপতির বাণী

image-not-found

শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। মানুষের অন্ন বস্ত্রের পর যে অধিকারটি সংরক্ষিত না হলে মানুষের মানবতা তথা বিকাশ অর্থহীন হয়ে পড়ে সেখানেই শিক্ষার অধিকারটি বিশ্বব্যাপি স্বীকৃত। শিক্ষাই মানুষকে মানবতার অফুরন্ত স্বাদ পাইয়ে দিতে পারে। তাছাড়া সুনাগরিক হয়ে গড়ে ওঠার অন্যতম বাহন হচ্ছে শিক্ষা।
যুগে যুগে মানুষের চিন্তা চেতনা বদলায়। আর সেই বদলে যাওয়া সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য, সভ্যতা যুগের ক্রমবিকাশে জাতীয় ঐতিহ্যের লালন ও নিজেদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য শিক্ষার আলো প্রতিটি সমাজের জন্য অপরিহার্য একটি বিষয়।
ছোট ধামাই উচ্চ বিদ্যালয় মৌলভীবাজার জেলার একটি প্রাচীন বিদ্যাপীঠ। বিদ্যালয়টির ক্যাচমেন্ট এলাকার অধিবাসীদের অধিকাংশই হতদরিদ্র চা জনগোষ্ঠী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অধ্যুষিত। ফলে এখানকার শিক্ষা বিস্তারে বিদ্যালয়টি যথেষ্ট ভুমিকা রেখে আসছে। আজ এই বিদ্যালয়টির আলোকিত ভুমিকার কারণে অনেকেই সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। আমরা তাদের জন্য গর্ববোধ করি। যদিও একসময় বিদ্যালয়টি গ্রামিণ পাহাড়ি এলাকায় অবস্থানের কারণে এর অবকাঠামোগত উন্নয়নে অনেকটা পিছিয়ে ছিল কিন্ত বর্তমানে বিদ্যালয়টি অধুনা শহরাঞ্চলের কোন বিদ্যালয় থেকে পিছিয়ে নেই। এই গ্রামিণ বিদ্যালয়টিতে একসময় তথ্য প্রযুক্তির ছোঁয়া ছিল না। কিন্ত বর্তমান শিক্ষা বান্ধব সরকারের সময়ে এসে এখন বিদ্যালয়টিতে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব এর মতো কম্পিউটার শিক্ষার সকল সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে। তাই সকলের কাছে উদাত্ত আহবান জানাই, আসুন আপনার আমার সন্তানদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করে সোনার বাংলায় সোনার মানুষ গড়তে সচেষ্ট হই।

প্রধান শিক্ষকের বাণী

image-not-found

মান সম্মত শিক্ষা লাভে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজন অনস্বীকার্য। বয়স ভেদে শিক্ষার্থীর শারীরিক, মানসিক বিকাশ সাধনে কিংবা জ্ঞান আহরণে সুনির্দিষ্ট কিছু কাঠামো বা শ্রেণিভিত্তিক ব্যবস্থাপনা বজায় রেখে নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ মানুষের দ্বারা সৃষ্ট পাঠদানের পরিবেশই হল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
সভ্যতার বিকাশ তথা জ্ঞান বিজ্ঞানের অগ্রগতির ধারা মাথায় রেখে মাঝেমধ্যে এই কাঠামোবদ্ধ শিক্ষার ধারা বা ক্রমের পরিবর্তন ঘটে। পরিবর্তনটা আনা হয় বৈশ্বিক ও সামাজিক বিকাশের ধারার সাথে সমন্বয় রেখে।
শিক্ষা হচ্ছে সভ্যতার বিকাশের প্রথম শর্ত। যে জাতি শিক্ষায় যত এগিয়ে গেছে তারা তত উন্নতির শিখরে আরোহন করতে পেরেছে। আর যারা এগোতে পারেনি তারা থেকে গেছে পেছনে। তা ছাড়া তথ্য প্রযুক্তির ক্রমাগত উন্নতি এখন বিস্তৃত বিশ্বকে একটি গ্রামের সমতুল্য করে দিয়েছে। এখন শহর ও গ্রামের ব্যবধান আর আগের মতো নেই। আয় উন্নতির ক্ষেত্রেও এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। এসবই সম্ভব হয়েছে শিক্ষাক্ষেত্রে আসা বিরামহীন পরিবর্তনের কারণে। বর্তমানে গ্রামীণ জনপদে থাকা একটি বিদ্যাপীঠ দেশের নামকরা অনেক বিদ্যালয়কেও টেক্কা দিয়ে চলেছে। এই পরিবর্তনের ধারাকে অব্যাহত রাখতে সরকার বড্ড পরিকর। প্রথম দিকে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণাটা ছিল অনেকের কাছে হাস্য কৌতুকের বিষয়। অথচ আমরা আজ সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে ধাবিত হচ্ছি। সারা বিশ্ব আজ আমাদের অগ্রগতি আর প্রচেষ্টাকে রোল মডেল হিসেবে দেখছে। আর এসবই সম্ভব হয়েছে সরকার তথা আমাদের দৃঢ় আত্মবিশ্বাস আর মনোবলের কারণে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের প্রজন্মদের শিক্ষায় দীক্ষায় যোগ্য করে তুলতে হবে। তাদের ভেতরে আত্মবিশ্বাসের ভিত তৈরি করে দিতে হবে। এসব করার জন্য আমাদের সন্তানদের নিয়মিত বিদ্যালয়ে পাঠাতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। আজকের একজন নাগরিক কেবল দেশকেই তুলে ধরবে না, সে বিশ্বের দরবারে গিয়ে নেতৃত্বও দেবে। তবেই আমরা স্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্ট নাগরিকের ভুমিকা সঠিক ভাবে নেভাতে পারব।